বনলতা সেনের খোঁজেবনলতা সেন বলে আদৌ কি কেউ ছিল? কে এই নারী? কী তার পরিচয়? জীবনবাবুর সঙ্গে এই মেয়ের কেমন করে পরিচয়? এ নিয়ে নাটোরে কিছু কাহিনী রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে জীবনানন্দ গবেষকরাও খুঁজেই চলেছেন তাঁদের কবির নায়িকাকে
কে এম আব্দুস সালাম গবেষকদের কাছে বনলতা সেন রহস্যময়ী এক নারী, তবে নাটোরের মানুষের কাছে বনলতা রক্ত-মাংসের মানুষ, পরম আপনজন। নাটোরে তাঁকে নিয়ে আছে অনেক কিংবদন্তি, চমৎকার সব কাহিনী। তারই কয়েকটা শোনা যাক।
জানা যায়, একবার ব্যক্তিগত কাজে ট্রেনে করে দার্জিলিং যাচ্ছিলেন জীবনানন্দ দাশ। তখন নাটোর হয়ে যেত দার্জিলিং মেল। একাকী কামরায় বসে আছেন কবি। নাটোর স্টেশনে হঠাৎ অপরূপ সুন্দর একটা মেয়েকে নিয়ে ট্রেনে উঠলেন এক বৃদ্ধ। বৃদ্ধের নাম ভুবন সেন। তিনি নাটোরের বনেদি সুকুল পরিবারের তারাপদ সুকুলের ম্যানেজার। ভুবন সেনের সঙ্গিনী তাঁরই বিধবা বোন, বনলতা সেন। অচিরেই পথের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েন ভুবন সেন। কামরায় জেগে থাকেন শুধু দুজন_জীবনানন্দ দাশ আর বনলতা সেন। এই নীরব মুহূর্তে বনলতা সেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন এমনিতে মুখচোরা কবি। একান্তে একসঙ্গে কেটে যায় বেশ কিছু সময়। একসময় মাঝপথে কোনো এক স্টেশনে নেমে যান বনলতা সেন। বনলতা সেন চলে গেলেন; কিন্তু কবির মনে রেখে গেলেন এক বিষণ্নতার ছাপ। তারই প্রকাশ নাকি 'থাকে শুধু অন্ধকার মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন'।
দ্বিতীয় কাহিনীও ভুবন সেনের বিধবা বোন বনলতাকে নিয়ে। নাটোরে বেড়াতে এসেছেন কবি। অতিথি হয়েছেন নাটোরের বনেদি পরিবার সুকুলবাবুর বাড়িতে। এক দুপুরে সুুকুল এস্টেটের ম্যানেজার ভুবন সেনের বাড়িতে নিমন্ত্রণ। ভুবন সেনের বিধবা বোন বনলতা সেনের ওপর পড়েছে অতিথি আপ্যায়নের দায়িত্ব। খাবারের বিছানায় বসে আছেন জীবনানন্দ। হঠাৎ অবগুণ্ঠনহীন এক বিধবা বালিকা। শ্বেত-শুভ্র বসনের চেয়েও অপরূপ এক সৌন্দর্যমণ্ডিত মুখ। চমকে উঠলেন কবি। এত অল্প বয়সে বিধবা বসন কবির মনকে আলোড়িত করে। হয়তো সে সময় দু-একটি কথাও হয় কবির সঙ্গে বনলতার। তারপর একসময় নাটোর ছেড়ে যান কবি। সঙ্গে নিয়ে যান এক অপরূপ মুখের ছবি। সেই ছবিই হয়তো কবিকে পথ দেখিয়েছে অন্ধকারে, চারদিকে সমুদ্র সফেনের ভেতরও খুঁজে পেয়েছিলেন শান্তির পরশ।
তৃতীয় কাহিনীর পটভূমি নাটোরের রাজবাড়ি। রাজবাড়ির চাকচিক্য তখন ভুবনজোড়া। অর্ধবঙ্গেশ্বরী রানি ভবানী রাজবাড়িতে যে ঐশ্বর্যের সমাবেশ ঘটিয়েছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পরও সেই সৌকর্যের অনেকটাই ধরে রেখেছিলেন পরবর্তী বংশধররা। কীর্তিমান মানুষদের নিয়মিত আসা-যাওয়ায় তখনো মুখরিত রাজবাড়ি। তাদের আদর-আপ্যায়নের কাহিনীও কিংবদন্তিতুল্য। এমনই সময় নাটোরের কোনো এক রাজার আমন্ত্রণে রাজবাড়িতে বেড়াতে আসেন জীবনানন্দ দাশ। সেখানে তিনি ছিলেন দুদিন। কবির দেখাশোনার জন্য কয়েকজন সুন্দরী পরিচারিকাকে নিয়োগ করেন রাজা। তাঁদের সেবায় মুগ্ধ হন কবি, একজনের প্রতি জেগে ওঠে আলাদা মমতা। সেই মমত্ববোধ থেকে কবি তাঁকে নিয়ে লিখতে চান কবিতা। লোকলজ্জার ভয়ে শিউরে ওঠে ওই নারী। কবিকে অন্য কোনো নামে কবিতা লিখতে অনুরোধ করেন তিনি। রোমান্টিক কবি তাঁর সেই মানসপ্রিয়ার নাম দেন বনলতা সেন।
বনলতা সেনকে নিয়ে নাটোরে এমনি আরো কয়েকটি কাহিনী রয়েছে। যদিও এসব কাহিনীর কোনো ভিত্তি নেই।
Source: Kalerkantho

জানা যায়, একবার ব্যক্তিগত কাজে ট্রেনে করে দার্জিলিং যাচ্ছিলেন জীবনানন্দ দাশ। তখন নাটোর হয়ে যেত দার্জিলিং মেল। একাকী কামরায় বসে আছেন কবি। নাটোর স্টেশনে হঠাৎ অপরূপ সুন্দর একটা মেয়েকে নিয়ে ট্রেনে উঠলেন এক বৃদ্ধ। বৃদ্ধের নাম ভুবন সেন। তিনি নাটোরের বনেদি সুকুল পরিবারের তারাপদ সুকুলের ম্যানেজার। ভুবন সেনের সঙ্গিনী তাঁরই বিধবা বোন, বনলতা সেন। অচিরেই পথের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েন ভুবন সেন। কামরায় জেগে থাকেন শুধু দুজন_জীবনানন্দ দাশ আর বনলতা সেন। এই নীরব মুহূর্তে বনলতা সেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন এমনিতে মুখচোরা কবি। একান্তে একসঙ্গে কেটে যায় বেশ কিছু সময়। একসময় মাঝপথে কোনো এক স্টেশনে নেমে যান বনলতা সেন। বনলতা সেন চলে গেলেন; কিন্তু কবির মনে রেখে গেলেন এক বিষণ্নতার ছাপ। তারই প্রকাশ নাকি 'থাকে শুধু অন্ধকার মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন'।
দ্বিতীয় কাহিনীও ভুবন সেনের বিধবা বোন বনলতাকে নিয়ে। নাটোরে বেড়াতে এসেছেন কবি। অতিথি হয়েছেন নাটোরের বনেদি পরিবার সুকুলবাবুর বাড়িতে। এক দুপুরে সুুকুল এস্টেটের ম্যানেজার ভুবন সেনের বাড়িতে নিমন্ত্রণ। ভুবন সেনের বিধবা বোন বনলতা সেনের ওপর পড়েছে অতিথি আপ্যায়নের দায়িত্ব। খাবারের বিছানায় বসে আছেন জীবনানন্দ। হঠাৎ অবগুণ্ঠনহীন এক বিধবা বালিকা। শ্বেত-শুভ্র বসনের চেয়েও অপরূপ এক সৌন্দর্যমণ্ডিত মুখ। চমকে উঠলেন কবি। এত অল্প বয়সে বিধবা বসন কবির মনকে আলোড়িত করে। হয়তো সে সময় দু-একটি কথাও হয় কবির সঙ্গে বনলতার। তারপর একসময় নাটোর ছেড়ে যান কবি। সঙ্গে নিয়ে যান এক অপরূপ মুখের ছবি। সেই ছবিই হয়তো কবিকে পথ দেখিয়েছে অন্ধকারে, চারদিকে সমুদ্র সফেনের ভেতরও খুঁজে পেয়েছিলেন শান্তির পরশ।
তৃতীয় কাহিনীর পটভূমি নাটোরের রাজবাড়ি। রাজবাড়ির চাকচিক্য তখন ভুবনজোড়া। অর্ধবঙ্গেশ্বরী রানি ভবানী রাজবাড়িতে যে ঐশ্বর্যের সমাবেশ ঘটিয়েছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পরও সেই সৌকর্যের অনেকটাই ধরে রেখেছিলেন পরবর্তী বংশধররা। কীর্তিমান মানুষদের নিয়মিত আসা-যাওয়ায় তখনো মুখরিত রাজবাড়ি। তাদের আদর-আপ্যায়নের কাহিনীও কিংবদন্তিতুল্য। এমনই সময় নাটোরের কোনো এক রাজার আমন্ত্রণে রাজবাড়িতে বেড়াতে আসেন জীবনানন্দ দাশ। সেখানে তিনি ছিলেন দুদিন। কবির দেখাশোনার জন্য কয়েকজন সুন্দরী পরিচারিকাকে নিয়োগ করেন রাজা। তাঁদের সেবায় মুগ্ধ হন কবি, একজনের প্রতি জেগে ওঠে আলাদা মমতা। সেই মমত্ববোধ থেকে কবি তাঁকে নিয়ে লিখতে চান কবিতা। লোকলজ্জার ভয়ে শিউরে ওঠে ওই নারী। কবিকে অন্য কোনো নামে কবিতা লিখতে অনুরোধ করেন তিনি। রোমান্টিক কবি তাঁর সেই মানসপ্রিয়ার নাম দেন বনলতা সেন।
বনলতা সেনকে নিয়ে নাটোরে এমনি আরো কয়েকটি কাহিনী রয়েছে। যদিও এসব কাহিনীর কোনো ভিত্তি নেই।
Source: Kalerkantho
No comments:
Post a Comment